الأحد، 26 ديسمبر 2010

শরীরচর্চার অসাধারণ প্রভাব

সাধারণত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা হয় দেহকে সুগঠিত করার জন্য বা হৃদরোগ, ডায়বেটিস ও ক্যান্সারের মত রোগগুলোকে প্রতিহত করা বা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। কিন্তু কখনো কি বুদ্ধিবৃত্তিক বা মানসিক উন্নতির জন্য ব্যায়াম করার কথা ভেবে দেখেছেন? হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সাইক্রিয়াটিষ্ট জন রেটির ভাষায়, “মনকে উৎফুল্লতা রাখা, স্মৃতিশক্তি ও আত্মস্থ করার শক্তিকে আরো বৃদ্ধি করতে মস্তিষ্ককে সাহায্য করার জন্য ব্যায়ামই সবচেয়ে ভালো কর্মপন্থা হতে পারে।”



শরীরচর্চার গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি প্রভাবঃ
১। মস্তিষ্কের উপর বয়স এবং মানসিক ও শারীরিক চাপের প্রভাব কমানোঃ ব্যায়াম বা শরীরচর্চা আপনার মস্তিষ্কের উপর বয়স এবং শারীরিক-মানসিক চাপের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব মহিলারা দিনে ৪৫ মিনিট করে তিনদিনব্যাপী ব্যায়াম করেছে তাদের মস্তিষ্কের কোষের উপর বয়সের প্রভাব ব্যায়াম না করা মহিলাদের তুলনায় অনেক কম পড়েছে। তাছাড়া মস্তিষ্কের যেসব অংশ আমাদের দুঃশ্চিন্তা লাঘব করার কাজে নিয়োজিত সেসব অংশে ব্যায়াম করার ফলে নিয়মিত রক্ত সরবরাহ ঘটে যা আমাদের মানসিক প্রশান্তি আনয়নে সাহায্য করে। তাছাড়াও দেখা গিয়েছে, ট্রেডমিল বা ক্রসট্রেনারের উপর ৩০ মিনিট লাফানো-ঝাপানো মানসিক প্রশান্তির জন্য দায়ী মস্তিষ্কের বিভিন্ন তরল পদার্থ যেমন সেরোটোনিন, ডোপামিন, নোরেপাইনফ্রাইন এর কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় যা মুহূর্তের মধ্যে সকল দুঃশ্চিন্তা দূর করে দেয়।
২। হতাশা দূর করাঃ শরীরচর্চা হতাশা দূর করতেও সাহায্য করে। গবেষকদের মতে, দিনে ৩৫০ ক্যালরি করে সপ্তাহে তিনদিন ব্যায়ামের পিছনে নিয়মিত শক্তি খরচ এন্টি-ডিপ্রেসেন্টের কাজ করতে পারে। এটি সম্ভবত এই কারণে যে, হতাশার ফলে মস্তিষ্কের যেসব অঞ্চলের নিউরন ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেসব অঞ্চলে নিউরনের পুনরুৎপাদন প্রক্রিয়াকে ব্যায়াম উত্তেজিত করে আরো বাড়িয়ে তোলে। তাছাড়া এনিমেল স্টাডি থেকে দেখা গিয়েছে যে, মস্তিষ্কের অণুর উৎপাদন, যা কিনা স্নায়ুকোষগুলোর মধ্যে সংযোগ আরো বৃদ্ধি করে, প্রাকৃতিক এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট হিসেবে কাজ করে।
৩। শিখার দক্ষতা বৃদ্ধিঃ ব্যায়াম মস্তিষ্কের গ্রোথ ফ্যাকটরের কর্মতৎপরতা বাড়িয়ে দেয় যার ফলে মস্তিষ্কে নতুন নতুন কোষ উৎপাদন বৃদ্ধি পায় যার ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পায় এবং নতুন কোন কিছু আয়ত্তে আনার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, যেসব কাজে মাথা একটু বেশ খাটাতে হয় যেমন, টেনিস খেলা কিংবা নাচের ক্লাসে অংশ নেয়া এসব কাজগুলো করতে মূলত বিভিন্ন কাজের মধ্যে সমন্বয় করতে হয় যার ফলে মস্তিষ্কের উপর চাপ পড়ে। আর রেটির ভাষায়, মাংসপেশীর মত মস্তিষ্ককে বিকশিত করতেও মস্তিষ্কের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হয়। তাছাড়াও এই ধরনের জটিল কাজগুলো আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। একদল জার্মান গবেষক হাইস্কুল ছাত্রদের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখতে পেয়েছেন, ১০ মিনিট নিত্যদিনকার কাজের বদলে জটিল ফিটনেসমূলক কাজে সময় দেয়ার ফলে তারা গভীর মনোনিবেশকারী কাজগুলোতে অপেক্ষাকৃত ভালো কৃতিত্ব দেখাতে পেরেছে।
৪। আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিঃ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ব্যায়ামের ফলে শুধু দেহগড়ন শক্তিশালী করার মাধ্যমেই নয় ফিটনেসের অন্যান্য দিকের ক্রমশ উন্নতি সাধন যেমন, আগের চেয়ে বেশী সময় ধরে দৌড়াতে পারা কিংবা বেশী ওজনের ভারোত্তলোন করতে পারা আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ভালো কারণ হতে পারে।
৫। আনন্দদায়ক অনুভুতি প্রদানঃ রেটির মতে, ৩০-৪০ মিনিট সম্ভাব্য দ্রুত বেগে দৌড়ানো, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার কাটার পর পাঁচ মিনিটের জন্য স্বাভাবিক গতি এনে এরপর পুনরায় দ্রুতগতিতে চলা এভাবে চারবার পুনরাবৃত্তি করার ফলে দিনের বাকি সময় বেশ খোশ মেজাজে যায় যাকে কিনা বিজ্ঞানের ভাষায় রানার'স হাই বলে।

ليست هناك تعليقات:

إرسال تعليق