الأحد، 26 ديسمبر 2010

কৃত্রিম মিষ্টিকারকঃ চিনির বিকল্প হিসেবে কতটুকু নিরাপদ ?

চিনি ছাড়া আমাদের একদিনও চলে না, এটা যেমন সত্য, তেমনি অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এটাও আমাদের অজানা নয়। খাদ্যাভাসে মাত্রাতিরিক্ত চিনি থাকলে তা রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে, আর ফল স্বরূপ বেড়ে যায় ওজন।। তাই আজকাল অনেকেই কৃত্রিম মিষ্টিকারকের দ্বারগ্রস্থ হচ্ছেন, যাতে কম ক্যালোরি থাকার কারনে ওজন বেড়ে যাবার ভয় নেই, অন্যদিকে খাবারের মিষ্টতাও বজায় থাকছে।



এখন প্রশ্ন আসতে পারে কৃত্রিম মিষ্টিকারকের পেছনের রহস্য কি এবং এগুলো কাজ করে কিভাবে? কৃত্রিম মিষ্টিকারকের মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক অথবা ভেষজ উপাদান থাকে যা খাদ্যের মিষ্টতা চিনির চেয়ে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে রক্তে ক্যালোরির মান একদম নিয়ন্ত্রণে রেখে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এসবের বিকল্প পাওয়া সত্যি দুষ্কর।


ডায়াবেটিস রোগীরা অনেকেই এসব কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করে আসছেন তাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে। কারন ঐ একটাই, রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ না বাড়িয়ে খাদ্যে মিষ্টতা আনার ক্ষমতা। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, কিছু কিছু কৃত্রিম মিষ্টিকারকযুক্ত খাদ্য দ্রব্যাদি রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও পারে। উদাহরণ হিসেবে চিনিমুক্ত দই অথবা চিনিমুক্ত কুকিজ অথবা চকোলেটের কথা বলা যেতে পারে। এসব খাদ্যে বেশিরভাগ সময় যেসব কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার করা হয় সেগুলোতে সরবিটল অথবা ম্যানিটল থাকে, এবং এসব উপাদান রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতেও পারে। আবার কিছু চিনিমুক্ত খাদ্যের মধ্যে আটা/ময়দা থাকতে পারে যা রক্তে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে সহজেই।


বিজ্ঞানীরা এসব কৃত্রিম মিষ্টিকারকের উপর অনেক গবেষণার পর এসবের দৈনিক গ্রহণের নিরাপদ মাত্রাও স্থির করে দিয়েছেন। যেগুলোতে এস্পারটাম (Aspartame) থাকে সেগুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা একদম নিরাপদ নয়, এবং আপনার ওজনানুযায়ী কেজিপ্রতি দৈনিক ৫০ মিলিগ্রাম গ্রহণ করা যেতে পারে। ধরুন আপনার ওজন ৬৫ কেজি, তাহলে আপনি দৈনিক গ্রহণ করতে পারবেন (৬৫ x ৫০) মিলিগ্রাম অর্থাৎ ৩ দশমিক ২৫ গ্রাম। স্যাকারিন (Saccharin) জাতীয় মিষ্টিকারক রান্নার জন্য উপযোগী কিন্তু ওজনানুযায়ী কেজিপ্রতি ৫ মিলিগ্রামের উপরে গ্রহণ করা একদম উচিত হবেনা। এক্সালফেম (Acesulfame K) জাতীয় মিষ্টিকারকগুলোর ওজনানুযায়ী দৈনিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা হল ১৫ মিলিগ্রাম কেজিপ্রতি। সুক্রালোজ (Sucralose) জাতীয়গুলো রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৫ মিলিগ্রাম কেজিপ্রতি।


সংবাদপত্র এবং ইন্টারনেটে কৃত্রিম মিষ্টিকারক কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে নানান সময়ে নানান প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। এদের বেশিরভাগের ভাষ্য ছিল কৃত্রিম মিষ্টিকারক নানান ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারন হতে পারে, যার মধ্যে ক্যান্সারের নাম উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আমেরিকার ক্যান্সার গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে সাধারণ মানুষ এসব নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারে বলে জানিয়েছে। তবে যারা বিরল পিকেইউ (hereditary disease phenylkeronuria) অসুখে ভুগছেন, তাদের এস্পারটাম (Aspartame) জাতীয় মিষ্টিকারক ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।

খাদ্যাভাস থেকে শুধুমাত্র চিনির অপসারণ ঘটালেই যে দেহে ক্যালোরির মান কমে যাবে, এমন ভুল ধারনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এসব খাবারের মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণের কারনেও ক্যালরির পরিমান বেড়ে যেতে পারে। তাই বিকল্প চিনি অথবা কৃত্রিম মিষ্টিকারকের ব্যবহারে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত।

ليست هناك تعليقات:

إرسال تعليق