السبت، 25 ديسمبر 2010

জন্মনিয়ন্এন পদ্বিতী

জন্মনিয়ন্ত্রণ ফোম সাধারণত ক্যানে করে পাওয়া যায়। তবে প্রথমবার আপনি যখন এটি ক্রয় করবেন তখন সাথে একটা এপ্লিকেটর থাকা চাই যা দিয়ে আপনি একে ব্যবহার করবেন। এরপর থেকে আপনার কেবলমাত্র রিফিল কিনলেই চলবে। আপনি যখন সেক্স করবেন তার প্রায় ২০ মিনিট আগেই ফোম ব্যবহার করে নিন। ক্যানের ক্যাপটি খুলে নিন। একে ভালভাবে ঝাঁকিয়ে নিন। এবার ক্যানের শীর্ষে এপ্লিকেটরটিকে লাগিয়ে নিন। এখন একটা এপ্লিকেটরকে ফোম দিয়ে ভরে যোনির ভেতরে প্রবেশ করান। আপনি যদি একই সাথে আবার সেক্স করেন তবে বেশি করে ফোম ব্যবহার করুন। ফোমটি ক্রয়ের সময় দেখে নিন এটার গয়ে শুক্রানাশক বা জন্মনিয়ন্ত্রক বা স্পার্মিসাইডেল লেখাটি আছে কিনা। প্যাকেটের গায়ে দেখে নিন যে, এটি আবার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে কিনা। জন্মনিয়ন্ত্রণ জেলি এবং ক্রিম টিউবে পাওয়া যায়। তবে এগুলোকেও ফোমের মতো ব্যবহার করতে হয়। প্রথমবার ক্রয় করার সময় সাথে এপ্লিকেটর কিনে নিন এবং পরবর্তীতে কেবল রিফিল কিনলেই চলবে। ক্যাপটিকে খুলে ফেলুন এপ্লিকেটরকে জেলি বা ক্রিম দিয়ে ভরে নিন এবং যোনিতে প্রবেশ করান। কনডম ব্যবহার করুন। এটা অনেকভাবেই পাওয়া যায় যেমন মসৃণ, রঙিন বা সুগন্ধযুক্ত ও পাওয়া যেতে পারে।আঙ্গুলের নখের খোঁচা লেগে এটি যেন ফেঁটে বা ছিড়ে না যায়। একটা কনডমকে কখনোই পুনরায় ব্যবহার করবেন না। আপনি যদি পিচ্ছিলকারক ব্যবহার করেন তবে খেয়াল করবেন তা যেন পানিতে দ্রবণীয় হয়। চর্বিতে দ্রবণীয় লুব্রিকেন্টগুলো কনডমকে নষ্ট করে দিতে পারে। খুব উষ্ণ স্থানে কনডমকে সংরক্ষণ করবেন না-কেননা বেশি তাপে কনডম নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্যাকেটের গায়ের মেয়াদের তারিখ ভালভাবে দেখে নিন। পুরুষ পেনিস দাঁড়ানোর বা উত্থানের সাথে সাথে কনডম পরে ফেলা উচিত। বীর্যস্থলনের বীর্য যাতে থাকতে পারে সেজন্য কনডমের মাথার দিকে একটু জায়গা রাখুন। বীর্যস্থালনের পর পেনিস দাঁড়ানো বা উত্থিত থাকা অবস্থাতেই যোনি থেকে বের করে ফেলুন। কনডম যখন যোনি থেকে বের করবেন তখন বীর্য যাতে গড়িয়ে পড়তে না পারে তাই কনডমের ওপরে একটা আঙ্গুল রাখুন।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা খাবার বড়ি
জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল প্রকৃতপক্ষে দুইটি মেয়েলি হরমোন ইস্ট্রোজেন আর প্রজেষ্টেরন থাকে। এই মেয়েলি হরমোনগুলো নিদের্শিত মাত্রায় সেবন করলে গর্ভাশয় থেকে ডিম্বানু আর নিঃসৃত হয় না। এ সময়টুকুতে এর সাথে অন্য কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যেমন কনডম ও ফোম ব্যবহার করা যেতে পারে। সপ্তাহের একই দিনে নতুন প্যাকেট শুরু করতে হবে। দুই ধরনের প্যাকেটে পিল বাজারে পাওয়া যায় ঃ ২১ দিনের ও ২৮ দিনের। যে পিলগুলো ২১ দিন সেবন করানো হয় সেগুলোর প্রত্যেকটি মুলত হরমোন পিল। ২৮দিনের প্যাকেটে ২১টা থাকে হরমোন পিল আর বাকিগুলো নিয়মিত বড়ি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য। পিল সেবনজনিত কারণে মাসিক ঋতুস্রাব একটু কমে যেতে পারে বা হঠাৎ করে একটা পিরিয়ড নাও হতে পারে-এটা কিন্তু স্বাভাবিক।


প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে পিল সেবন করুন।
পিল একটা দৈনন্দিন কাজের সাথে বেঁধে দিন
পিলটি সেবন করতে ভূলে যান বা ৪ ঘন্টার বেশি দেরি হয় তবে মনে পড়ে সাথে সাথে পিলটি সেবন করুন। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য মাসের বাকিদিনগুলোতে কনডম ও শুক্রানাশক ব্যবহার করুন।


নারী পিল সেবনকালীন সময়ে শরীরের কতক পরিবর্তন দেখতে পান। এগুলোর মাঝে রয়েছে বমি বমিভাব, মাথাব্যথা, স্তনে ব্যথা, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, মাসিক চক্র চলাকালীন সময়ে রক্তক্ষরণ হওয়া, উত্তেজনা, বিষন্নতা বা মনোপজ পরিবর্তন। অনেক নারীর বেলায় পিলের ব্রান্ড বদলাতে হতে পারে বা জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্য কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে।

ডায়াফ্রাম এবং জেলি
ডায়ফ্রাম একটা রবার ক্যাপের মতো জিনিস। এটাকে যোনির ভেতরে যৌনসঙ্গমের সময় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এটাকে যোনির পশ্চাতে স্থাপন করা হয় যাতে করে সারভিক্সকে কভার করে থাকে। এই সারভিক্সের মাধ্যমে যোনি ও জরায়ুর মাঝে যোগাযোগ রক্ষা হয়। বিভিন্ন সাইজে বা আকারের ডায়াফ্রাম বাজারে প্রচলিত আছে। প্রত্যেক নারীকে ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীর নিকট থেকে সঠিক সাইজ জেনে নিতে হবে। ডায়াফ্রাম ব্যবহারের সাথে শুক্রানাশক জেলি বা ক্রিম অবশ্যই রাখতে হবে। ডায়াফ্রামে একটি এপ্লিকেটর দিয়ে ২-৬ থেকে চা চামচ বা ১০-৩০ মিঃ লিঃ জেলি ব্যবহার করুন। ডায়াফ্রাম প্রবিষ্ট করানোর আগে এর কিনারায় চাপ দিন অর্ধেক করে ভাঁজ করুন এবং যোনি দিয়ে পিছলিয়ে যতদূর যায় যেতে দিন। একটা আঙ্গুল দিয়ে এটাকে অনুভব করুন এবং নিশ্চিত হন যে, এটা সারভিক্সকে আবৃত করে রেখেছে। আপনি যদি কয়েকবার সেক্স করেন তবে অবশ্যই বেশি করে শুক্রনাশক জেলি ব্যবহার করতে হবে। সাধারণত ব্যবহারের ২ ঘন্টার পর থেকে শুক্রানাশক জেলির কার্যকারিতা কমতে থাকে। আবার জেলি ব্যবহার করতে গিয়ে ডায়াফ্রাম সরিয়ে ফেলবেন না। আপনি যখন জেলি বা ক্রিম ক্রয় করবেন তখখন অবশ্যই প্যাকেটের গায়ে কন্ট্রাসেপটিভ বা শুক্রনাশক কথাটি দেখে নিন। এগুলো যে কোনো ড্রাগ ষ্টোর থেকে পাওয়া যেতে পারে। শেষ যৌনসঙ্গমের ৬-৮ ঘন্টা পর যোনি থেকে ডায়াফ্রাম সরিয়ে ফেলুন। এই সময়ে গোসল করবেন না, সাঁতার কাটবেন না। তবে শাওয়ার ব্যবহার করতে পারেন। প্রস্রাব বা মল ত্যাগ করার সময় ডায়াফ্রাম থাকলেও তা কোনো সমস্যার সৃষ্টি করবে না। ব্যবহারের পর এটাকে গরম পানি দিয়ে পরিস্কার করুন ও ভালভাবে শুকিয়ে নিন। দেখে নিন এতে কোনো ফুটো বা কানা বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা। খুব ছোট ছিদ্র থাকলেও তা দিয়ে শুক্রানু ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। প্রতি ২ বছর পরপর নতুন ডায়াফ্রাম কিনুন।


আইইউডি (ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস)
আইইউডি বা ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস হলো একটা 'টি' আকারের প্লাস্টিকের ছোট টুকরা যা কিনা ডাক্তারের সহায়তায় নারীর জরায়ুতে সংস্থাপন করা হয়। এর ফরে নিষিক্ত ডিম্বানুটি মাসিক চলাকালীন সময়ে জরায়ু থেকে বেরিয়ে আসে বা জরায়ু ত্যাগ করে। একবার সংস্থাপিত করার পর আইইউডি প্রায় ১-৫ বছর পর্যন্ত ভাল থাকে। আইইউডি যুক্ত কতক নারী তাদের শরীরে কতক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। এর মাঝে রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি ও তীব্র মাত্রার পিরিয়ড, অতিরিক্ত কুঞ্চন, দুই মাসিকের অন্তর্বতর্ীকালীন সময়ে যোনি দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। আইইউডি কোনো কোনো সময় জরায়ুর প্রাচীর বা দেয়ালকে চাপ দিতে পারে। তাই আইইউডি সংস্থাপিত থাকা অবস্থায় টিউবার প্রেগনেন্সি বা ফেলোপিয়ান নালিতে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা বিদ্যমান। আইইউডির সুতার মতো একটা অংশ বিদ্যমান যা সারভিক্স দিয়ে ঝুলে থাকে। এর সাহায্যে বোঝা যায় যে, আইইউডি ঠিক জায়গামত সংস্থাপিত হয়েছে এবং এটাকে সরানোর কাজটিকে সহজসাধ্য করে তোলে। আইইউডি জরায়ুতে সংস্থাপিত করানো প্রথম মাসের প্রতি সপ্তাহে আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা উচিত এবং এরপরে প্রতিমাসে অন্তত একবার ঠিকভাবে আছে কিনা তা অবশ্যই দেখতে হবে।


প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে জন্মনিয়ন্ত্রণ
মাসের কয়েকটা নিরাপদ দিন রয়েছে যে দিনগুলোতে কিনা যৌনসঙ্গম করলে গর্ভসঞ্চারের ঝুঁকি থাকে না। এ দিনগুলো আপনি আন্দাজ করে গুনে বা পঞ্জিকা থেকে হিসেবে করে বের করলে সঠিক হবে এমন কোনো কথা নেই। গর্ভসঞ্চার প্রথমবার যৌনসঙ্গমেই হয়ে যেতে পারে এবং মাসিক স্রাব চলাকালীন সময়ে এমনকি পিরিয়ড চলাকালীন সময়েও হয়ে যেতে পারে। প্রতি মাসেই নারীর শরীর গর্ভসঞ্চারের জন্য প্রস্তুত হয়। গর্ভাশয় থেকে একটি ডিম্বানু বা ডিম্বনালী বা ফেলোপিয়ান টিউব দিয়ে চলে আসে। এই ডিম্বানুটির যদি শুক্রানুর সাথে মিলন ঘটে তবে নিষেক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং গর্ভসঞ্চার হয়। পিরিয়ড শুরু হওয়ার ২ সপ্তাহ পূর্বে গর্ভাশয় থেকে ডিম্বাণুটিকে নির্গত হয়। ডিম্বাণুটি গর্ভাশয় থেকে সময়ের আগে বা সামান্য পরে নির্গত হতে পারে। কতক নারীর বেলাতে এটা পিরিয়ডকালীন সময়ে হতে পারে। গর্ভাশয় থেকে নিঃসৃত হবার পর ডিম্বানালীতে আসতে প্রায় ১ দিন লেগে যেতে পারে। এটার যদি শুক্রাণুর সাথে মিলন হয়েই যায় তবে গর্ভসঞ্চার হতে পারে। প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি দম্পতিদেরকে শেখায় মাসের কোন দিনগুলো সবচেয়ে নিরাপদ।


পুরুষদের স্থায়ী বন্ধ্যাকরণঃ ভেসেকটমি
পুরুষদেরকে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যাকরতে যে পদ্ধতিটির সাহায্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা হয় তাকে ভ্যাসেকটমি বলা হয়। ভ্যাসেকটমি করার সময় পুরুষের ভাসডিফারেন্স বা শুক্রানালীকে কেটে বেঁধে দেয়া হয়। এই শুক্রানালী শুক্রানু বহন করে। কাজেই শুক্রাণু বীর্যে আসতে পারে না। কাজেই নারী গর্ভসঞ্চার করতে পারে না। লোকাল এনাসথেসিয়া প্রয়োগ করার পর ডাক্তার শুক্রাশয়ের পাশে একটু করে কাটেন শুক্রাণু বহনকারী নালিকা বা শুক্রানালীকে কেটে বেঁধে দেয়া হয় এবং আগের কাটা অংশ সেলাই করে দেয়া হয়। ভ্যাসেকটমি অপারেশন করার পরবতর্ী ২ দিন পর থেকে যে কোনো পুরুষ সুস্থ বোধ করেন। রোগী সাধারণত ব্যথাবোধ করে থাকেন। সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধ এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। ভ্যাসেকটমি করার সাথে সাথেই এটি কার্যকরী হয় না। শুক্রনালীর যেখানটায় বাঁধা হয়েছে তার ওপরে কিন্তু স্পার্ম বা শুক্রাণু থাকতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত না ডাক্তার একেবারে নিশ্চিত হতে না পারবে, ততোদিন পর্যন্ত জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্য পদ্ধতি যেমন কনডম ও ফোম গর্ভসঞ্চার এড়াতে অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন ভ্যাসেকটমি অপারেশনে এই যৌন ইচ্ছা বা যৌন আবেদনময়তার তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটে না। ভবিষ্যতে আর কোনো সন্তান নেবেন না এটা ুসম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে ভ্যাসেকটমির সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। ভ্যাসেকটমি অপারেশন করানোর পরে কেউ যদি আবার পূর্বের শুক্রানালীর অবস্থা ফিরে পেতে চায় বা সন্তান চায়, তবে তাঁর অবস্থাকে আগের ঠিক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া বেশির ভাগ সময়ই সম্ভবপর হয় না।


নারীদের স্থায়ী বন্ধ্যাকরণঃ লাইগেশন
নারীদের বেলায় লাইগেশন একটা অত্যন্ত কার্যকর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। ডিম্বানালী গর্ভাশয় থেকে জরায়ুতে ডিম্বানু পরিবহন করে। তাই ডিম্বানালীকে কেটে বেঁধে দিলে ডিম্বাণু জরায়ুতে আসতে পারে না। অপারেশন করানোর পরেও একবার মাসিক ঋতুস্রাব হয়ে যাবার পরে গর্ভসঞ্চারের ঝুঁকি ব্যতিরেকে যৌনসঙ্গম করা যেতে পারে। এটা সাধারণত নারীর যৌন আবেদনময়তা বা যৌন ইচ্ছা বা মাসিক স্রাবের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। নারীদের এই অপারেশনটি করতে জেনারেল এনাসথেসিয়া প্রয়োগ করতে হয় এবং সারতে একটু সময়ের প্রয়োজন। কতক নারী রয়েছে যারা লাইগেশন করানোর পরে আবার ডিম্বানালী বা ফেলোপিয়ান জোড়া লাগাতে চান-তবে এটা সময়ব্যাপী ও জটিল অপারেমন। তাই লাইগেশন করার আগে অবশ্যই ভবিষ্যতে সন্তান নেবেন কিনা ভালভাবে চিন্তা করে নিন।


প্রাতঃকালীন পিল ও সঙ্গম পরবর্তী আইইউডি
প্রাতঃকালীন বা মর্নিং-আফটার পিল আসলে চার রকমের হরমোনের পিল বা বড়ি। যেসব নারী গত ৭২ ঘন্টা বা ৩ দিনের ভেতরে যৌনসঙ্গম করেছেন তাদের গর্ভসঞ্চার এড়াতে ডাক্তার এপিল প্রেসক্রাইব করতে পারেন। তবে আগে যৌনসঙ্গম করে থাকলে সেটা গর্ভসঞ্চারকে প্রতিরোধ করে না বা মাসিক চক্রের বাকি দিনগুলোতে গর্ভবতী হওয়াকে বাধা দিতে পারে না। একজন নারীকে চারটা পিল দেয়া হয়। এর মাঝে প্রথম ২টা পিল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেবন করতে বলা হয় বাকি ২টা পিল ১২ ঘন্টা পরে সেবন করতে বলা হয়। এই হরমোন পিল সেবনে বমি বমিভাব দেখা দিতে পারে, এধরনের পিল সাধারণত দুধ দ্বারা সেবন করতে হয়। যদি দ্বিতীয় ডোজের পিলটি বমি করে বের করে দেন, তবে ডাক্তার তৃতীয় মাত্রার ওষুধ দিয়ে থাকবেন। তবে তৃতীয় মাত্রার পিলদ্বয় যদি দরকার না পড়ে তবে এগুলোকে ফেলে দিন। পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া যেগুলো হতে পারে সেগুলো হলো যোনি দিয়ে রক্তক্ষরণ, জরায়ুর কুঞ্চন এবং ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা। এগুলো কয়েকদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তবে কোনো নারীর ক্ষেত্রে এটি কার্যকর না হলে সেক্ষেত্রে নারীকে অন্যান্য বিষয়টিকে বিবেচনা করতে হবে যেমন এবোরশন বা গর্ভপাত অথবা গর্ভবস্থাকে টিকিয়ে রাখা। প্রাতঃকালীন পিল সেবনের পরেও আরেকটা দ্বিতীয় পদ্ধতি রয়েছে যাকে বলে সঙ্গম পরবর্তী আইইউডি। কিছু ডাক্তার যৌনসঙ্গমের পরে গর্ভসঞ্চার এড়াতে আইইউডি নারীর যৌনাঙ্গ দিয়ে প্রবিষ্ট করান। অরক্ষিত যৌনসঙ্গমের ৭দিন পর পর্যন্ত এটি প্রয়োগ করা যেতে পারে।


নরপ্ল্যান্ট
যেসব নারীরা দীর্ঘমেয়াদি কোনো জন্মনিয়ন্ত্রন পরিকল্পনা বহন করতে চান কিন্তু ভবিষ্যতে কোনো সন্তান নেয়ার কথাও বিবেচনা করেন, তারা নরপ্ল্যান্ট পদ্ধতিটি বহন করতে পারেন। যারা নরপ্ল্যান্ট পদ্ধতিটি বেছে নেন তাদের প্রতিদিন জন্মনিয়ন্ত্রণের পথ্য সেবন করতে হয় না নরপ্ল্যান্ট হচ্ছে ছয়টি ছো্ট ক্যাপসুল বা রডের মত একটি সেড ডাক্তার নারীর বাহুর ওপরের অংশ কেটে ত্বকের ঠিক নিচে রডগুলোকে বিশেষভাবে প্রবিষ্ট করান, । কোনো স্টিকের প্রয়োজন হয় না। ত্বকের ওপর দিয়ে কয়েকদিনের জন্য একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে আবৃত করে দিতে হয়। একবার প্রবিষ্ট করানোর পর ক্যাপসুলগুলো ২৪ ঘন্টার ভেতরে এদের কার্যকারিতা প্রদর্শন করে এবং আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত গর্ভসঞ্চার প্রেিরাধ করতে পারে। নরপ্ল্যান্ট ক্যাপসুলগুলো সাধারণত প্রোজেসটিন নামক একটি হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় এটা তিনভাবে গর্ভসঞ্চারকে বন্ধ করে থাকে।এটা ওভুলেশন প্রতিরোধ করে সারবাইকেল মিউকাস মেমব্রেনের পুরুত্বকে বাড়িয়ে দেয়। এন্ড্রোম্যাট্রিয়াম বলে তার গুরুত্ব কমিয়ে দেয়। জন্মনিয়ন্ত্রণ ক্যাপসুলগুলো ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকারিতা প্রদর্শন করে যে কোনে সময় নারীর বাহুর ওপরের দিককার ত্বকের নিচ থেকে এটাকে সরিয়ে ফেলা যেতে পারে। ক্যাপসুল সরিয়ে ফেলার কিছুদিন পর নারী আবার গর্ভসঞ্চার করতে পারে। নরপ্ল্যান্ট ব্যবহার করাকালীন সময়ে গর্ভসঞ্চার করেছেন এমন নারীর সংখ্যা বিরল। নরপ্ল্যান্ট সন্তানের জন্মগত ত্রুটির সাথে জড়িত এরকম কিছু এখনও প্রমাণিত হয়নি। নরপ্ল্যান্ট ব্যবহার করে যেসব পাশর্্বপ্রতিক্রিয়ায় ভোগেন সেগুলোর হচ্ছে অনিয়মিত ঋতুস্রাবকালীন রক্তক্ষরণ। ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, ত্বকে মেচেতা বা ব্রণ হওয়া, বিষন্নতা, মাথাব্যথা, চুল গজানো এবং ত্বকের যে স্থানটিতে ক্যাপসুল প্রবিষ্ট করানো হয়েছে যেখানে চুলকানি হতে পারে। কোনো নারী যদি নরপ্ল্যান্ট ব্যবহারের কথা বিবেচনা করেন, তবে তার অবশ্যই উচিত একজন ভাল কাউন্সিলরের সাথে ব্যাপারটি নিয়ে পরামর্শ করা। যেসব মহিলাদের যকৃতে কোনো সমস্যা রয়েছে স্তন ক্যান্সারের কোন পূর্ব ইতিহাস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে নরপ্ল্যান্ট ব্যবহার না করাই উচিত।

অন্যান্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং আরইউ-৪৮৬
বর্তমানে বেশ কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো কিনা বাংলাদেশে তেমন প্রচলিত নয়। সারভাইকেল ক্যাপ অনেকটা ডায়াফ্রামের মতই। এটাকে সারভিক্স সাকসানের মাধ্যমে আবৃত করে দেয়া হয়। তবে এটি যে কোনো নারীর বেলায় অভিজ্ঞ ডাক্তার বা ক্লিনিকে করানো উচিত। এটার এক তৃতীয়াংশে সঙ্গমের প্রায় ৬ ঘন্টা থেকে ২৪ ঘন্টার ভেতরে এটাকে সরিয়ে ফেলতে হয়। এটাকে সতর্কভাবে সরাতে হবে, ভালভাবে পরিস্কার করতে হবে এবং ভালভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। এর কার্যকারিতার হার শতকরা ৮২ থেকে ৯২ ভাগ। তবে এতটা নিয়মমাফিক ব্যবহার করা হলে তার ওপর এর সফলতা অনেকখানি নির্ভর করে। জন্মনিয়ন্ত্রণ স্পঞ্জ যে কোনো ড্রাগ স্টোর বা ফার্মেসি থেকে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই পাওয়া যেতে পারে। এটাকে যৌনমিলনের প্রায় ২৪ ঘন্টা পূর্বেই যোনিত প্রবিষ্ট করাতে হয়।


আপনি কনডম সম্পর্কে কতটা জানেন
জন্মনিয়ন্ত্রক সামগ্রী হিসেবে কনডম আমাদের অতি সুপরিচিত। অথচ দুঃখজনক সত্য হলো- কনডম সম্পর্কে অনেক ধারণা নিতান্ত অনুমান নির্ভর। অথচ আপনি একটু সচেষ্ট হলেই সবকিছু কোনো স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছ হতে জেনে নিতে পারতেন। আমরা এখানে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের কিছু তত্ত্বের উল্লেখ করলাম।


১. স্খলন শেষ হবার সাথে পুরুষের পূর্ণ উদ্রিক্ততা কমে যাবার আগে পুরুষাঙ্গ বের করে আনা উচিত। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় দিক হলো শিথিল পুরুষাঙ্গ যোনি হতে বের করে আনার সময় পুরুষাঙ্গ প্রান্তে তা হাতের আঙ্গুল দিয়ে ধরে রাখা চাই। নতুবা বিড়ম্বনা ঘটে যেতে পারে।
২. আমাদের অনেকে ধারণা-প্রাক লুব্রিকেশন দেয়া কনডম যোনিতে পুরুষাঙ্গ প্রবেশের জন্য যথেষ্ট। মারাত্মক বিভ্রান্তিকর এ বিশ্বাস। এতে যে লুব্রিকেশন থাকে তা কোনোভাবেই প্রাকৃতিক লুব্রিকেশনের বিকল্প ভাবতে নেই। কনডমের সাবলীলতা ধরে রাখতে কনডমের সাথে কমবেশি লুব্রিকেশন থাকে। যৌন সঙ্গমে নির্দিষ্ট মাত্রায় শৃঙ্গার শেষে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করানো উচিত। প্রাকৃতিক পরিমিত লুব্রিকেন্টের অভাবই কনডম ছিঁড়ে যাওয়ার মত অনাকাক্ষিত ঘটনার কারণ।
৩. কনডম সবধরনের যৌনব্যাধি প্রতিরোধ ধারণা- সব ধরনের যৌনব্যধি প্রতিরোধ করতে পারলেও এইড্স-এর বেলায় সীমাবদ্ধতা থেকে যায়। এটি সত্য নয়।
৪. কনডমের কেবলমাত্র একটিই সাইজ বিদ্যমান, তা পুরুষাঙ্গ ভেদে বড় ছোট হতে পারে। নানান ধরনের ব্রান্ড ভেদে কনডমের সাইজে ছোটবড় দেখা যায়। নানান ব্রান্ড ব্যবহার করে ট্রয়াল এন্ড এরর' মানে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোন কনডমটি থাকে তা বুঝে নেয়া উচিত। কনডমের আকার পুরুষাঙ্গের আকারের তুলনায় বেশি ঢিলে হওয়া বা বেশি আটসাট হওয়াটা কনডম ছেঁড়ার অন্যতম কারণ। দোকানে কনডম নেয়াকালে কোনো ধরনের আড়ষ্টতায় ভোগা উচিত নয়।
৫. কনডম ছিঁড়ে গেলে কি করবেন? সঙ্গমে কনডম ছিঁড়ে যাবার মত ঘটনা ঘটতে পারে। পাশ্চাত্য গবেষণাতে দেখা গেছে-দম্পতিরা নিয়মিত কনডম ব্যবহার করলেও এ দুর্ঘটনায় কি করা উচিত তা প্রতি তিনজন দম্পতিদের একজন জানে না। কেউ কেউ ডুশ দেয়ার কথা বলে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনার কিছু করণীয়তা থেকে যায় প্রথমে আপনি হিসেব করে নিন আপনি আপনার মাসিক চক্রের কোন তারিখে। মাসিক শুরুর দিক হতে শুরু করে চৌদ্দ দিনের মাথায় স্ত্রী দেহে সাধারণত ওরিউলেশন ঘটে থাকে। আপনি এ ক্ষেত্রে মনিং আফটার পিল খেতে পারেন। অবশ্য এ ব্যাপারে ডাক্তারের কাছ হতে আগে জেনে নেবেন। যদি আপনার যৌনসঙ্গীর ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে, যৌনরোগের ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন আগাম। আজ এখানেই থাক।

ليست هناك تعليقات:

إرسال تعليق