الجمعة، 7 يناير 2011

প্রোস্টেট প্রদাহ এবং করণীয়

প্রোস্টেট সংক্রান্ত কতিপয় সমস্যা সম্পর্কে অনেক লোকই অনেক কিছুই জানেন, যেমন প্রোস্টেটের স্ফীতি কিংবা প্রোস্টেট ক্যান্সার ইত্যাদি। কিন্তু প্রোস্টেট প্রদাহ এমন একটি বিরল সমস্যা, যার কথা কদাচি শোনা যায়। সাধারণভাবে বলতে গেলে প্রোস্টেট গ্রন্থির সংক্রমণ বা প্রদাহই প্রোস্টেট প্রদাহ। প্রোস্টেট প্রদাহ কয়েক রকমের হয়। এ সমস্ত সমস্যা জীবন বিপন্নকারী না হলেও সমস্যাগুলো বোঝা দুরূহ। তদুপরি রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসাও দু:সাধ্য ব্যাপার।


প্রদাহ: অতি সম্প্রতি আপনার যদি মূত্রথলে বা মূত্রাশয়ের সংক্রমণ হয়ে থাকে, মূত্রাশয়ে যদি ক্যাথিটার প্রবিষ্ট করিয়ে থাকেন, আপনার প্রস্রাব যদি পুরোপুরি বের না হয়, তাহলে আপনার প্রোস্টেট সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। অল্পসংখ্যক লোকের খেত্রে দেখা গেছে, জগিং, সাইকেল চালানো, ঘোড়ায় চড়া ইত্যাদি কারণে প্রোস্টেট প্রদাহ ঘটে থাকে। ভারী জিনিস উত্তোলন করলেও এ রকম হতে পারে।


১৮ থেকে ৫০ বছর বযসীদের বেলায় এ সমস্যা সচরাচর হয়ে থাকে। তবে এর চেয়ে অধিক বয়সীরাও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ১২ ভাগ লোক তাদের জীবনের কোনো এক সময়ে প্রোস্টেট প্রদাহের কারণে চিকিৎসকের মুখোমুখি হন। এ রোগ নির্ণয় করা অত্যন্ত দুরূহ। আপনার গ্রন্থি প্রদাহিত কিংবা সংক্রমিত হয়েছে কিনা, সেটা বোঝার জন্য মলদ্বারের ডিজিটাল পরীক্ষা করতে হবে। গ্রন্থি ম্যাসাজ বা মর্দন করার প্রয়োজন হলে আপনাকে আগে ভাগেই মলত্যাগ করতে হবে। উদ্দেশ্য, প্রোস্টেট থেকে তরল সংগ্রহ করে সংক্রমণ হয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করা দেখা। সংক্রমণ যদি একিউট হয়, তাহলে ম্যাসাজ এমনকি পরীক্ষার প্রয়োজনও না হতে পারে। প্রোস্টেট প্রদাহ চার ধরনের এবং এগুলোর লক্ষণও ভিন্ন।


একিউট ব্যাকটেরিয়াল প্রোস্টেট প্রদাহ: সবচেয়ে বিরল কিন্তু সবার চেয়ে অধিক সুস্পষ্ট ধাঁচের সমস্যা হলো একউিট ব্যাকটেরিয়াল প্রোস্টেট প্রদাহ। মূত্রনালী কিংবা বৃহদান্ত্রে বসবাসরত ব্যাকটেরিয়ার কারণে এ ধাঁচের সংক্রমণ ঘটে। এ রোগের লক্ষণসমূহ চাঙ্গা হয়ে উঠে হঠাৎ করেই। লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, শৈত্য, ফ্লু সদৃশ অনুভূতি, পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা, প্রস্রাবের চাপাধিক্য, রক্ত মিশ্রিত প্রস্রাব, রাগমোচনের সময় পুরুষাঙ্গে ব্যথা, ব্যথার কারণে প্রস্রাবে কষ্ট, প্রস্রাবে জ্বালা, প্রস্রাবের ক্ষীণ প্রবাহ ইত্যাদি। এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের শরণাপন্না হতে হবে।


ক্রনিক ব্যাকটেরিয়াল প্রোস্টেট প্রদাহ: এ সমস্যাও ঘটে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণেই। একিউট প্রোস্টেট প্রদাহের অব্যবহিত পরেই এ ধরনের সংক্রমণ ঘটতে পারে, সম্ভবত মূত্রনালীতে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া কিংবা রক্তবাহিত সংক্রমণের কারণেই। লক্ষণসমূহ একিউট প্রোস্টেট প্রদাহের অনুরূপ। তবে এর আক্রমণ কম তীব্রতা সম্পন্ন এবং আক্রমণ শুরু হয় একটু ধীর গতিতে।


ক্রনিক পেলভিক পেইন সিনড্রোম (দীর্ঘস্থায়ী প্রোস্টেট প্রদাহ): এটি সবচেয়ে সাধারণ ধাচের প্রোস্টেট প্রদাহ বটে। তবে এর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সবচেয়ে দূরূহ। কারণ রোগটি কিসে ঘটে তা আজও জানা সম্ভব হয়নি। লক্ষণসমূহ একিউট প্রোস্টেট প্রদাহের অনুরূপ। তবে পার্থক্য এই যে, রোগীর প্রস্রাবে কিংবা প্রোস্টেট তরলে কোনো ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় না এবং রোগী জ্বরেও আক্রান্ত হন না।


এসিম্পটোমেটিক ইনফ্লেমেটরি প্রোস্টেট প্রদাহ: এ রোগের কোনো লক্ষণ নেই। ইলেভেটেড প্রোস্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেন (স্প্রা) এর কারণ খুঁজতে গিয়ে এ রোগ ধরা পড়ে।


চিকিৎসা: প্রোস্টেট প্রদাহের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। সকল লক্ষণযুক্ত প্রোস্টেট প্রদাহের চিকিৎসা করা হয় এন্টিবায়োটিকের সাহায্যে। একিউট ব্যাকটেরিয়াল প্রোস্টেট প্রদাহের ক্ষেত্রে, কয়েক সপ্তাহ এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে উপকার হয়। তবে সবটাই নির্ভর করে ওষুধের কতটা প্রভাব আপনার উপর পড়ছে, তার উপর। ক্রনিক ধাঁচের রোগের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয় অধিককাল। কয়েক মাসও চিকিৎসা চলতে পারে। সংক্রমণ পুনরায় শুরু হলে আবার ওষুধ গ্রহণ করতে হয়। প্রোস্টেট গ্রন্থি অনেকগুলো গ্রন্থির সংযোগস্থল। গ্রন্থি সংক্রমিত হলে এখানে কেলসিয়াম জমা হতে পারে। ফলে প্রোস্টেট টিসু্যতে ঠিকমত ওষুধ পৌছতে সমস্যা হয়। রোগ থেকে আরাম পেতে নিম্নোক্ত ওষুধগুলোও ব্যবহূত হতে পারে:
০০আলফা বস্নকার্স। এটি প্রস্রাবের প্রবাহকে সুগম করে।
০০ব্যথানিরোধক ওষুধ। এগুলো স্বস্তি ফিরিয়ে আনে। সংবেদনশীল স্নায়ুর ব্যথাচক্রও ভেঙ্গে দেয় এ ওষুধ।


উপরন্ত একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত থেরাপিস্ট আপনাকে কতিপয় ব্যায়াম ও শস্নথন কৌশলে অভ্যস্ত করে তুলতে পারেন। এতে আপনার শ্রেণীর পেশীর টেনশন দূর হবে। মানসিক চাপ কমাতে বায়োফিডব্যাকও সহায়তা দেবে। গরম ন্যাকড়া দিয়ে ব্যথাযুক্ত স্থানে সেক দিলে কিংবা ঈষদুষ্ণ পানিতে নিজেকে ডুবিয়ে রাখলেও উপকার পাবেন।

ليست هناك تعليقات:

إرسال تعليق